বৃদ্ধার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে নুরুল ইসলাম ৪দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তার অভাবের সংসারে ছেলে নুরুল ইসলাম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তিনি না খায়ে আছে। তার কপালে এক বেলাও খাবার জোটেনি বৃদ্ধার।
ছেলে তার বাড়ির কাছের যে দোকান থেকে মালামাল কেনেন সেখানে ওই বৃদ্ধা মা বাকিতে চাল-ডাল নিতে গেলে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। দোকানদার ছেলেকে ছাড়া বাকি দেবেন না বলে জামালে সে বাধ্য হয়ে একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে খুঁজতে বেরিয়েছেন ৮০ বছরের বৃদ্ধা মা জরিনা বেগম।
জরিনা বেগমের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দশকানি এলাকার বাসিন্দা ও রামশিং এলাকার মৃত আইয়ূব আলী সর্দারের স্ত্রী।
জরিনা বেগম গতকাল বৃহস্পতিবার মুন্সিগঞ্জ আদালতে আসেন। আদালতের বাইরে দাঁড়িয়ে আইনজীবীদের জানান ছেলের সঙ্গে দেখা করতে তিনি জেলে যাবেন।
এর আগে বুধবার বাড়ির কাছের চায়ের দোকানদার হাসি বেগম তাকে জানান তার ছেলে জেল হাজতে গেছে। এমন কথা শুনে দশকানি গ্রাম থেকে ৬ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে আদালতে আসেন।
বৃদ্ধা মা জরিনা বেগম জানান, গত ১৫ বছর আগে তার স্বামী ৩ ছেলে সন্তান রেখে মারা যান। তারপর থেকে তিনি অনেক কষ্টে ছেলেদের মানুষ করেছেন। তার বড় দুই ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার করে মায়ের খোঁজ নেন না তারা। মায়ের ছোট ছেলে নুরুল ইসলাম (১৮) দিনমজুরের কাজ করে মাকে নিয়ে দশকানি গ্রামের আলী আকবরের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকেন। ছেলে নুরুল ইসলাম যখন যে কাজ পান তাই করেন। কিন্তু ছোট ছেলে ৪ দিন আগে কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি।
তিনি জানান, ৪দিন ধরে তার ছেলে নিখোঁজ থাকার কারনে এই ৪ দিন ধরেই ভাত না খেয়ে আছেন। তিনি এখন ছেলের সঙ্গে দেখা করতে জেলহাজতে যাবেন বলে আদালতে এসেছেন। বাড়ির কাছের দোকানে বাকিতে চাল-ডাল আনতে গেলে তারা ছেলেকে ছাড়া দিবেন না বলে জানিয়ে দিলে বাড়ি ফিরে আসেন। এই ৪ দিন মানুষের কাছ থেকে চা-বিস্কুট চেয়ে নিয়ে খেয়ে বেঁচে আছে। অনেকের কাছে ভাত খেতে চেয়েছেন কিন্তু কেউ খেতে দেয়নি।
আদালতের মাধ্যমে বৃদ্ধার ছেলেকে সদর থানা পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছিল কি-না সে বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যকর্মীরা অনুসন্ধান করে কিছুই পাননি।